টিআইএন বাতিল হয় না, মারা যাওয়ার পরও রিটার্ন দিতে হয় । যেহেতু কয়েক বছর ধরে আয় নেই, সেহেতু ই–টিআইএন বাতিল করতে চেয়েছেন। কিন্তু পারছেন না। কারণ, এসংক্রান্ত অধ্যাদেশে টিআইএন বাতিলের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। সে জন্য অনেককে প্রতিবছর বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
বর্তমান আয়কর অধ্যাদেশে টিআইএন বাতিল বা স্থগিত করাসংক্রান্ত ধারা নেই। তাই আপনি একবার টিআইএন নিলে জীবনভর প্রতিবছর আয়-ব্যয়ের বিবরণী জানিয়ে রিটার্ন জমা দিয়ে যেতে হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণে করযোগ্য আয় না থাকলেও কিন্তু রিটার্ন দেওয়ায় কোনো ছাড় নেই। এমনকি বছরের পর বছর আপনার যদি এক টাকাও আয় না হয়, তবু রিটার্ন দিতে হবে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনি টিআইএন বাতিল বা স্থগিত করতে চাইলেও পারবেন না। তবে জমির ক্রেতা ও ক্রেডিটধারীরাই কেবল এ ক্ষেত্রে মাফ পান।
সব টিআইএনধারীর জন্যই রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। বর্তমানে দেশে ৬৭ লাখ টিআইএনধারী আছেন। এর মধ্যে এ বছর ২৩ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন দিয়েছেন। রিটার্ন জমা না দিলে আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারায় জরিমানা ও বিলম্ব সুদ আরোপের বিধান আছে।
কোনো করদাতা মারা যাওয়ার পর যদি তাঁর সম্পদ থেকে আয় হয়, তাহলে উত্তরাধিকারীদের কর দিতে হবে। প্রশ্ন উঠতে পারে, এনবিআর মৃত করদাতার সম্পদ থেকে আয়ের ওপর কীভাবে কর আদায় করবে? এর উত্তর হলো, কর কর্মকর্তারা প্রথমেই মৃত করদাতার একজন উত্তরাধিকারীকে প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করবেন। সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনার নোটিশ করে তা ওই উত্তরাধিকারকে জানাবেন। পরে ওই উত্তরাধিকারী মৃত করদাতার পক্ষে প্রতিবছর রিটার্ন জমা দিয়ে নির্ধারিত কর পরিশোধ করবেন। যত দিন পর্যন্ত ওই সম্পদ তাঁর উত্তরাধিকারীদের নামে ভাগ-বাঁটোয়ারা না হবে, তত দিন মনোনীত প্রতিনিধি ওই মৃত করদাতার পক্ষে কর দিয়ে যাবেন।
তবে এটাও মনে রাখুন, মৃত ব্যক্তির নামে থাকা সম্পদ বা ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুধু করযোগ্য আয় থাকলেই রিটার্ন দিয়ে কর দিতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকলে রিটার্ন দিতে হবে না।